কর আইনের যে চারটি দূর্বলতা করদাতাদের ভীতি সৃষ্টি করে!
--
আইন যত সহজ হবে, রাষ্ট্র ততবেশি কর পাবে। মানুষের মৌলিক অধিকার ততবেশী সুরক্ষিত হবে।
কথায় আছে মৃত্যু আর কর ছাড়া পৃথিবীতে কোন কিছুই নিশ্চিত নয়।
করের মত এমন একটি নিশ্চিত বিষয়কে করদাতাবান্ধব করা ছাড়া আধুনিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা অচল।
চলুন দেখা যাক, বাংলাদেশের কর আইন কেন সর্বজনপ্রিয় এবং সহজবোধ্য কোন বিষয় নয় তার চারটি প্রধান কারন?
১ ভাষাগত
সহজে বোধগম্য এবং সার্বজনীন হওয়ার জন্য
আইনের ভাষা হতে হবে সহজবোধ্য, জটিলতামুক্ত এবং সাবলীল যাতে সবাই বুঝতে পারে। আমাদের কর আইনের শব্দ এবং বাক্য পাঠক আকৃষ্ট করতে ব্যর্থ।
আমাদের কর আইন প্রনয়নে বিদেশি বিশেষজ্ঞরা যুক্ত থাকেন। তারা ইংরেজীকেই প্রাধান্য দিবেন দেশীয় ভাষাকে নয়, এটাই স্বাভাবিক। এর ফলে করযোগ্য আয় নির্ধারণ থেকে শুরু করে সব পর্যায়ে পরিপালনীয় বিধি-বিধানের ভাষায় এক ধরনের অস্পষ্টতা প্রকাশ পায়।
২ আবহ সংষ্কৃতি
কর আইনকে হতে হবে এদেশেরই আবহমান অর্থনীতির লালিত ধ্যান-ধারণার মেল বন্ধন। তবেই বাড়বে এর গ্রহণযোগ্যতা এবং এর বাস্তবায়নযোগ্যতা। অনেক ক্ষেত্রেই আয়ের পরিবেশের সাথে আইনের ভাষ্যের মিল খুঁজে পাওয়া দূরুহ।
৩ অগোছালো
কোনও একটা বিষয় বুঝতে পুরো আইনের বিভিন্ন জায়গায় করদাতাদের খোঁজাখুঁজি করা লাগে। অধ্যাদেশ, বিধি, এসআরও, জিও, সাধারণ আদেশ বিশেষ আদেশ এবং বিভিন্ন সার্কুলারের খপ্পরে পড়ে করদাতাদের হতাশ হতে হয়।
৪ উৎসে কর কর্তন, বিভিন্ন করহার
উৎসে কর কর্তন ও সংগ্রহের নিয়মাবলি এবং ভিন্ন ভিন্ন করহার প্রয়োগের জন্য আইনের বিষয়বস্তুর মর্ম উদ্বার বেশ সময় সাপেক্ষ এবং বিরক্তিকর। ফলে করদাতার কাছে এ আইন জটিল এবং নিরস বিষয় হিসাবে জায়গা করে নেয়। করদাতাগন নেহায়েত ঠেকায় না পরলে সামাজিক দায়িত্ব হিসাবে কর পরিশোধে উৎসাহ বোধ করেন না।
আমার বিশ্বাস উপরোক্ত চারটি বিষয়কে যত বেশী সহজেই বোধগম্য করা যাবে ততবেশী করের মত এমন নিরস এবং জটিল বিষয় নাগরিকের কাছে জনপ্রিয়তা পাবে এবং সরকারের রাজস্ব আদায় ত্বরান্বিত হবে। সরকার মানুষের মৌলিক অধিকার ততবেশী সুরক্ষিত করতে পারবে।